দাজ্জালের ফিতনা
দাজ্জাল যখন বের হবে তখন সে কোন জানোয়ারের পিঠে ঘুরে বেড়াবে। দাজ্জাল মৃত মানুষকে কিভাবে জীবিত করবে। দাজ্জালের শক্তি এবং গতিবেগ কতটা হবে। দাজ্জাল পৃথিবীতে কতদিন থাকবে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে আমাদের কি কি করনীয়। একজন মুসলিম হিসেবে আপনার জানা অবশ্যই দরকার। তাই লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কিয়ামতের বড় আলামত গুলোর মধ্যে অন্যতম আলামত হচ্ছে দাজ্জালের আগমন। শেষ জামানায় দাজ্জালের আগমন ঘটবে এক ভয়ানক জানোয়ারের উপর চড়ে সে আসবে। আজ হাদিসের আলোকে দাজ্জালের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য জানানোর চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। দাজ্জালের আগমনের সাথে সাথে সে পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক বানিয়ে ফেলবে। দাজ্জাল অনেক শক্তি নিয়ে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে মক্কা ও মদিনা ব্যতীত পৃথিবীর সকল স্থানেই সে প্রবেশ করবে। হাদিস অনুযায়ী দাজ্জালের আগমনের প্রথম দিন এক বছর সমান হবে। তৃতীয় দিন এক মাসের সমান হবে। তৃতীয় দিন হবে এক সপ্তাহের সমান। এবং বাকি দিনগুলো বছরের অন্যান্য সাধারণ দিনের মতোই দীর্ঘ হবে। নেওয়াজ বিন সাওমাত থেকে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে দাজ্জালের চলার গতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে। তিনি বলেন দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টি কে যে ভাবে চালিয়ে নেয় তার চলার গতি ও সেই রকম হবে।দাজ্জাল একটি গাধার উপরে চড়ে ঘুরে বেড়াবে। সেই গাধার আকার এত বড় হবে যে, সে এক একটি কদমে এক মাইল দূরত্ব অতিক্রম করতে পারবে।
দাজ্জাল এমন কোন জায়গা বাকি রাখবে না যেখানে সে যাবে না। কেবল মক্কা ও মদিনা ব্যতীত সে সবখানেই যাবে। আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাগনের মাধ্যমে মক্কা ও মদীনার হেফাজত করবেন। ফেরেশতাগণ সেদিন মক্কা-মদিনার প্রবেশপথ সমূহের তরবারি নিয়ে পাহারা দিবে। দাজ্জাল যেখানেই যাবে তার অনুসারী বৃদ্ধি পেতে থাকবে। নবি সল্লাল্লাহু আলা ওয়াসাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি দাজ্জাল বের হওয়ার কথা শুনবে। সে যেন তার কাছে না যায়। আল্লাহ শপথ এমন একজন লোক দাজ্জালের নিকটে যাবে যে নিজেকে ঈমানদার মনে করবে। অতঃপর সে দাজ্জালের সাথে পিরিত সন্দেহ জিনিসগুলো ও তার কাজকর্ম থেকে বিভ্রান্তিতে পড়ে ঈমান হারা হয়ে তার অনুসারী হয়ে যাবে। হে আল্লাহ আমরা আপনার কাছে দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই। দাজ্জালের কাছে অগনিত ধন সম্পদ থাকবে। দুই হাতে থাকবে জান্নাত ও জাহান্নাম। এই বিষয়ে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন দাজ্জালের সাথে যা থাকবে তা আমি অবগত আছি। তার সাথে দুটি নদী প্রবাহিত থাকবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর পরিষ্কার পানি দেখা যাবে। অন্যটিতে দাও দাও করে আগুন জ্বলতে দেখা যাবে। যার সাথে দাজ্জালের সাক্ষাৎ হবে সে যেনো দাজ্জালের আগুনে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পান করে কারন ওহা সুমিষ্ট পানি। দাজ্জাল আকাশকে আদেশ দিবে বৃষ্টি বর্ষণ করার জন্য আকাশ তার আদেশে বৃষ্টি বর্ষণ করবে। জমিনকে ফসল উৎপন্ন করতে বলবে জমির ফসল উৎপন্ন করবে। আর গৃহপালিত পশু আগে চেয়ে মোটা তাজা হবে। এবং পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি দুধ প্রদান করবে। মানুষকে মেরে ফেলার পর তাকে পুনরায় জীবিত হওয়ার আদেশ দিলে সে জীবিত হয়ে যাবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেন, দাজ্জাল মানুষের কাছে গিয়ে বলবে আমি যদি তোমার মৃত্য মাতা পিতাকে জীবিত করে দেখায় তাহলে কি তুমি আমাকে প্রভু হিসেবে মানবে। সে বলবে অবশ্যই মানবো এই সুযোগে শয়তান তার পিতামাতার আকৃতি ধরে সন্তানকে বলবে। হে সন্তান তুমি তার অনুসরণ করো সে তোমার প্রতিপালক। কিন্তু তা হবে জাদু এবং চোখের ধোকা দুর্বল ঈমানের ব্যক্তিরা তার অনুসারী হবে ।এবং নিজেদের ঈমানকে হারিয়ে ফেলবে। দাজ্জালের ফেতনা কেয়ামতের পূর্বে দশ আলামতের মধ্যে একটি সবচেয়ে ভয়ানক এক ফিতনা। দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাদের দাজ্জালের নিশানা প্রকৃতি সম্পর্কে জানিয়ে গেছেন। হাদিস অনুযায়ী তার চালু হবে বৃহদাকার একজন যুবক পুরুষ। শরীরের অঙ্গ হবে লাল মাথার চুল হবে কুকরা। কপাল হবে উচু বক্ষ হবে প্রশস্ত চক্ষু হবে টেরা এবং আঙ্গুর ফলের মতো উঁচু। তার কপালে দুই চোখের মাঝে বড় করে আরবিতে কাফের লেখা থাকবে। মুমিন ব্যক্তিরাই তার কপালে লেখা পড়ে বুঝতে পারতে। দাজ্জালের ফিতনা এত বেশি মারাত্মক হবে যে আদম আলাই সালাম এর সময় থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত এমন কোনো ফিতনা নেই যা দাজ্জালের ফেতনা থেকে গুরুতর হতে পারে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম উম্মতের মধ্যে দাজ্জালের ফিতনা সম্পর্কে সাবধান করে গেছেন। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য সব ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন । অবশেষে আমরা দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা আমাদের দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
আমিন।
0 Comments:
Post a Comment