দাব্বাতুল আরদ
দাব্বাতুল আরদ
আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছে। যেভাবে এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল সেই ভাবে একদিন এই পৃথিবী ও শেষ হয়ে যাবে যেটাকে কিয়ামত বলা হয়। যেটা ঘটার ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা হয়েছে পূর্বে কিয়ামতের যে লক্ষণগুলোর কথা কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে। তার মাঝে কিছু লক্ষণ তো ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। যেমন পাহাড় চূড়াতে মানুষের বসবাস শুরু করা। ঘরে ঘরে নাচ গান হওয়া মা-বাবার প্রতি ব্যবহার খারাপ করা। বেহায়াপনা জমিজমার জন্য ভাই ভাইকে হত্যা করা। এছাড়াও আরো অনেক কিছু চারিদিকে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কেয়ামত আসার আগে তিনটি লক্ষণ যেগুলো ঘটে যাওয়ার পর কেয়ামত চলে আসবে। এবং দাজ্জালের আগমন ইয়াজুজ মাজুজ এর বহিঃপ্রকাশ এবং দাব্বাতুল আরদ বন্ধুরা এই তিনটি লক্ষণ এর পর কেয়ামত চলে আসবে। এ সম্পর্কে হযরত হুযাইফা বিন আজিজ বলেছেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম জানিয়েছেন কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত ঘটবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না এই সকল লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে যায়। আর এই লক্ষণগুলো ভেতর এটাও একটা লক্ষণ করা হবে যে সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হবে এবং চারিদিকে ধোয়া হবে আর একটি প্রাণী মাটির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে। এবং মানুষের সাথে কথা বলবে এবং ইয়াজুজ মাজুজ নিয়ে তো সবসময় বিতর্ক ঘটে থাকে কিন্তু তৃতীয় লক্ষণ দাব্বাতুল আরদ যেটা সম্পর্কে অনেক কম মানুষই জানে। দাব্বাতুল আরদ এমন একটি প্রাণী যেটি টিকটিকির মতো চলাফেরা করবে। কেয়ামতের আগে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ থেকে অদ্ভুত ধরনের একটি প্রাণী বের হবে। এবং পুরো পৃথিবীতে বিতরণ করবে এটিকে কিয়ামতের বড় আলামত এর একটি গণ্য করা হয়। পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা আন-নামালে 82 নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন এই প্রাণীটি ভূপৃষ্ঠ থেকে বের হবে। অর্থাৎ দাব্বাতুল আরদ এমন একটি প্রাণী হবে যেটি ভূপৃষ্ঠ থেকে বেরোবে আল্লাহ তা'য়ালা বলেন যখন ঘোষিত শাস্তি তাদের নিকট আসবে তখন আমি মৃত্তিকা গর্ভ থেকে বের করব এক প্রাণী যা তাদের সাথে কথা বলবে এজন্য যে মানুষ আমার নিদর্শনে অবিশ্বাসী। এ আয়াত থেকে এটা তো স্পষ্ট বোঝা যায় এই প্রাণীটি কেয়ামতের আগে জমি থেকে বের হবে। এখন এই প্রাণীটি কেমন হবে এবং কি করবে আসুন সে সম্পর্কে জানা যাক হাদিস থেকে জানা যায় এই প্রাণীটি যখন আসবে তখন মানুষ দিনের পথ ছেড়ে আল্লাহতালা দ্বীনকে ভুলে পাপাচারে লিপ্ত হবে। চারিদিকে কাফেরদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে যাবে তখন এটি বেরিয়ে আসবে। এটি বের হবে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সবচেয়ে সম্মানিত মসজিদ থেকে ইবনে উমর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন সাফা পাহাড় পেটে প্রাণীটি বের হবে তিনি বলেন আমি যদি চাইতাম তাহলে যে স্থানটি থেকে বের হবে তাতে পা রেখে দেখাতে পারতাম জন্তুটি তিনবার বের হবে। প্রথমে বের হবে কাবাঘর হতে। তারপর দূরবর্তী একটি গ্রাম থেকে অতঃপর কিছুদিন লুকিয়ে থাকার পর আবার বের হবে পরিশেষে কাবা ঘর থেকে বের হবে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও ইবনে আব্বাস(রা) দাব্বাতুল আরদ বা অদ্ভুদ প্রাণীটির সম্পর্কে উনাদের মতামত অনুসারে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন হাদিসের আলোচনা হয়েছে সেইসব পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এর ভেতর অনেক প্রাণীর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকবে
অদ্ভুত এই প্রাণী কিছুটা উটের মতো হবে পা হবে চারটি মাথা হবে ষাড়ের মতো চক্ষ হবে শুকুরের মতো।কান হবে হাতির মতো। নাগ হবে উটপাখির মতো। বুক হবে সিংহের মতো। রং হবে নেকড়ের মতো। কপাল হবে ভেড়ার মত। ঘন পসম বিশিষ্ট হবে। মানুষের মত চেহারা হবে। এর কাছে দুইজন পয়গম্বর এর চিহ্ন থাকবে। তার সাথে থাকবে হযরত মুসা আলাই সালাম এর লাঠি। এবং সোলাইমান আলাইহি সালামের আংটি। কাফেরদের নাকে সোলাইমান (আ) এর আংটি দিয়ে দাক লাগাবে। এবং মুসা আলাই সালাম এর লাঠি দিয়ে মুমিনের চেখারাকে উজ্জ্বল করে দিবে। আর কাফেরদের নাকি আলাইহিস সালামের আংটি দিয়ে দাক লাগাবে ফলে তাদের চেহারা অনউজ্জ্বল হয়ে পড়বে। তখন অবস্থা এমন হবে কোন খাবারে টেবিল ও দাস্তর খানাই কয়েকজন লোক বসলে প্রত্যেকে একে অপরের ঈমান ও কুফরের বিষয়টি স্পষ্ট দেখতে পাবে। দাব্বাতুল আরদ পুরো পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করবে এবং সব মানুষের সাথে কথা বলবে। আল্লাহতালা বলেন যখন তাদের উপর নির্দেশ পতিত হবে। তখন আমি তাদের জন্য দাব্বাতুল আরদ বের করব। সে সবার সাথে কথা বলবে। সে সবার কাছে গিয়ে বলবে লোকেরা আমার নিদর্শনসমূহের বিশ্বাস করত না। আরো বিভিন্ন হাদীসে এসেছে সে মানুষকে তাকওয়া তাওক্কুল আল্লাহর ভয় প্রভৃতি বিভিন্ন সতউপদেশ দিতে থাকবে।
0 Comments:
Post a Comment